আয়নাঘরে আজান না শোনাতে জোরে মিউজিক বাজানো হতো: আরমান

আয়নাঘরে আজান না শোনাতে জোরে মিউজিক বাজানো হতো: আরমান

Image credits: Jugantor

২০১৬ সালে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আহমদ বিন কাসেমকে (আরমান) গুম করা হয়। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ‘আয়নাঘর’ নামে গোপন কারাগারে। যেখানে তিনি দীর্ঘ আট বছর বন্দি ছিলেন। গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর চোখ বেঁধে, হাতকড়া পরিয়ে গত আট বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো গোপন কারাগার থেকে বের করা হয় ব্যারিস্টার আহমদ বিন কাসেমকে। ৪০ বছর বয়সি আহমেদকে একটি গাড়ি থেকে ঢাকার উপকণ্ঠে একটি কর্দমাক্ত খাদে জীবিত ফেলে দেওয়া হয়। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আট বছরে এই প্রথম আমি তাজা বাতাস পেলাম। আমি ভেবেছিলাম ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।’ আট বছরের অন্ধকার জীবনের সেই ভয়াল অভিজ্ঞতা তিনি বর্ণনা করেছেন গণমাধ্যমের সঙ্গে। প্রায় আট বছর আরমানকে দুর্বিষহ যন্ত্রণাদায়ক সময় পার করতে হয়েছে। আট বছরের বন্দিশালার নির্যাতন যেন হার মানায় কল্পিত গল্পকেও। সেই দিনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে আরমান বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছিল, আমি জীবন্ত অবস্থায় কবরের মধ্যে থাকছি। আমি যদি জানতাম, আমার সঙ্গে এই আচরণ করা হবে, তাহলে আমি দুটি মেয়েকে একটু আদর করে দিয়ে আসতাম। আমি এতো দ্রুত আলাদা হয়ে যাব, চিন্তাও করতে পারিনি।’ আহমদ বিন কাসেম বলেন, ‘আমাকে বলা হয়নি আমি কোথায় আছি। আমাকে বলা হয়নি, আজকে কত তারিখ। এখন কয়টা বাজে, এটাও তারা বলত না। আমি বলতাম, আমি নামাজ পড়ব কীভাবে? তখন তারা বলতো, এটাই আদেশ। সময় বলা যাবে না। আশপাশে মসজিদ ছিল, আজান শোনা যেত। যখনই আজান শোনা যেত, তখনই তারা মিউজিক ছেড়ে দিত। যেন আজান শুনতে না পাই। তারা বলতো, এটাই আদেশ। কেউ যেন সময় বুঝতে না পারে, লোকেশন বুঝতে না পারে। আজান শুনতে না পারে। এভাবে আটটি বছর কেটে গেছে। একমাত্র আধ্যাত্মিক বিশ্বাসই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।’ কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শুকিয়ে গেছে ব্যারিস্টার আরমানের।

Sources

Categories

Bangladesh

প্রতিনিয়ত ভেরিফাইড নিউজ আপডেটের নোটিফিকেশন আপনার মোবাইলে পেতে আজই ইন্সটল করুন আমাদের মোবাইল অ্যাপ

Get it on Google Play